January 6, 2025, 11:40 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
সুজানগরে‌ অ-স্ত্রসহ কু-খ্যাত স-ন্ত্রাসী বাবু গ্রেপ্তার নড়াইলে ভ্যান চালক তামিম খাঁন হ-ত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন, আসামি গ্রেফতার ও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান সময় টিভি’র সাংবাদিকের উপর স-ন্ত্রাসী হা-মলার প্রতিবাদ ঝিনাইদহে মানববন্ধন ঈদগাঁওতে ট্রাক ভর্তি গর্জন কাঠসহ সাইদুর রহমান আটক নড়াইলে মুরগি বোঝায় পিকআপ-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘ-র্ষে দয়াল দাস নিহ-ত চলতি মাসের মধ্যে সংস্কার কমিটির রিপোর্ট জমা- উপদেষ্টা আদিলুর নাগেশ্বরীতে ডাব্লুএফপির গ্রামীণ সড়ক তৈরির কাজে নানা অনিয়ম প্যারেন্টস ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ নববর্ষের উপলক্ষে ৩৮বিজিবি’র অসহায় মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তা ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ইউএনও’র সাথে রুহিয়া থানা প্রেসক্লাবের সদস্যদের সৌজন্য সাক্ষাৎ
বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক

বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক

মোঃ হায়দার আলী রাজশাহী থেকেঃ বরেন্দ্র অঞ্চলের মাঠে মাঠে এখন পাকা সোনালী আমনের নজরকাড়া দুলনী। সে সাথে দুলছে কৃষকের মন। মাঠের পর মাঠজুড়ে সোনালী শিষে ভরা আমনের ক্ষেত। সোনালী ধানের শীষের সাথে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। করোনা বিপর্যয়, বন্যা, অতিবর্ষণের ধকল কাটিয়ে ঘাম ঝরা ফসল ঘরে তোলার সোনালী স্বপ্ন কৃষকের চোখে মুখে। কোথাও কোথাও দেখা যায় শীতের সোনামাখা রোদ্র গায়ে মেখে আমন কাটা ও মাড়াইয়ে কৃষকের ব্যস্ততা। মাঠ ভরা ধান দেখে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের ভাষ্য এবার আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এরই মধ্যে ১৫ শতাংশ রোপা আমন ধান কাটা শেষ হয়েছে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে আমন ধান কাটা শেষ হবে।
কৃষকরা বলছেন, এবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ধানের আবাদে অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি শ্রম দিতে হচ্ছে। শঙ্কাও কম ছিলো না। এখন তাদের অনেকেরই ধান পরিপক্ক হয়েছে। তারা ধান কাটতে শুরু করেছেন। এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে শেষ পর্যন্ত ফলন কিছুটা কমলেও দাম ভালো থাকায় খুশি তারা।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, রাজশাহী অঞ্চলে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৯০০ হেক্টর। আর ৩ লাখ ৯৬ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। মৌসুমে চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১ লাখ ৪৫ মেট্রিক টন। এরমধ্যে নওগাঁ জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪০ হাজার ১১৫ মেট্রিক টন অতিরিক্ত চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উৎপাদন ভালো হবে। মাঠ পর্যায়ে ঘোরার সময় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কৃষক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বোরো মৌসুমে ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় এ বছর বেশি জমিতে আমনের চাষ করেছেন। বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ের পরেই আমন ধান চাষ করা হয়েছে। ফলে জমি পতিত থাকেনি। তবে দুর্যোগের কারণে দেড় বিঘা মতো জমিতে ধান লাগাতে বিলম্ব হয়েছিলো তার। এবার ফলন ভালোই হয়েছে। আর দাম ভালো থাকায় লাভ হবে এমন প্রত্যাশা তার।
কৃষক আবদুল মতিন জানান, প্রাকৃতিক বৃষ্টিতেই এবার আমনের চাষ হয়েছে।
চলতি মৌসুমে আড়াই বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়েছিলেন তিনি। এখন ধান কাটা শুরু করেছেন। তবে গত বছরের মতো ফলন তেমন ভালো হয়নি। বিঘা প্রতি ফলন ১৫ থেকে ১৭ মণ হতে পারে। তবে ফলন কম হলেও দাম ভালো থাকায় পুষিয়ে যাবে। আর সামনে যদি দাম কমে যায় তাহলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রপ্সারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোঃ মোসদার হোসেন জানান, রাজশাহীতে রোপা আমন ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে প্রায় দু সপ্তাহ আগে। এর মধ্যে ১০ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। এবার ফলন খারাপ হয়নি। এখন পর্যন্ত যে ধান কাটা হয়েছে সেখানে ১৫ থেকে ২০ মণ করে বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে।
তিনি আরো জানান, এবার ধানের দামও ভালো আছে। ধানের ফলন ও দামে কৃষকরা খুশি। যেসব জমির ধান বন্যার পানি নামতে দেরি হয়েছে সে জমিতে আগাম জাতের আমন ধান চাষ করা হয়েছিলো। সব মিলিয়ে এবার ডিসেম্বরের মধ্যেই ধান কাটা শেষ হবে। আর এ বছর বিভিন্ন দুর্যোগ বিবেচনায় কৃষি বিভাগের লোকজন সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছেন।

কৃষকরা বলছেন, এবার আলুর দাম ভালো পাওয়ায় ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে চাষীরা আলু চাষের জন্য আগাম ধান কেটে আলু লাগানো শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ফলে দেখা দিয়েছে ধান কাটা শ্রমিকের সঙ্কট। ধান কাটা শেষ হলেই আলুর জন্য জমি প্রস্তুত করা হবে। তাই দ্রুত ধান কাটার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় শ্রমিকদের মজুুরি বেশি হওয়ায় অনেক কৃষক ধান কাটা পর আলু রোপনের জন্য জমি তৈরি শুরু করতে পারেন নি। বিভিন্ন এলাকায় থেকে নিয়মিতভাবে আসা শ্রমিকদের খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং তাদের আসার অপেক্ষায় রয়েছেন কৃষকরা। প্রতিবছরই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকরা এই সময়ে আসেন আলু রোপনের জন্য। এদিকে গেরস্ত বাড়ির আঙ্গিনা আর মাঠের খৈলান প্রস্তুত করা হচ্ছে নতুন ধান মাড়াইয়ের জন্য। কৃষানীরা উৎসবের আমেজ নিয়েই ব্যস্ত। নতুন চাল দিয়েই হবে পিঠা পায়েসের স্বাদ নেয়া। ধান বেচেই মিলবে জামা, কাপড়সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষ। করোনা আর বিরুপ আবহাওয়ার ক্ষতিও খানিকটা কাটিয়ে ওঠা যাবে। কোন কোন কৃষক কৃষানির সাথে কথা বলে জানা, গেছে এ ধান বিক্রি করে ছেলে মেয়ের বিয়ে আনন্দ করবেন।

মোঃ হায়দার আলী
রাজশাহী

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD